ঈদের দিন সবার ঘরে যখন আনন্দ আর উৎসব, তখন বিষাদের ঘন ছায়া নেমে এসেছে মৌলভীবাজারে বড়লেখার এক পরিবারে। শ্বশুরবাড়িতে কোরবানির মাংস পৌঁছে দেওয়া হলো না, সড়ক দুর্ঘটনায় ওই পরিবারের বড় ভাইয়ের মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার পর ছোট ভাই রুমন আহমদ (২৪) চলে গেলেন না ফেরার দেশে। শনিবার (৭ জুন) রাত সাড়ে ৯টায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রুমন। এর আগে শনিবার (৭ জুন) বিকেলে কোরবানির মাংস শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দিতে গিয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন বড় ভাই সাহেদ হোসেন সুমন (২৬)। এসময় ছোট ভাই রুমন আহত হন। নিহত দুই ভাই মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরসভার মহুবন্দ গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিনের ছেলে। বড় ভাই সুমন ছিলেন সৌদি প্রবাসী। মাত্র কয়েক মাস আগেই দেশে ফিরে বিয়ে করেছিলেন। এদিকে দুই ভাইয়ের এমন করুণ মৃত্যুতে শুধু তাদের পরিবার নয়, স্তব্ধ করে দিয়েছে গোটা বড়লেখা উপজেলার মানুষকেও। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেলে কোরবানির গরুর মাংস শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দিতে ছোট ভাই রুমনকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে দক্ষিণভাগের দিকে যান সাহেদ। বড়লেখা-কুলাউড়া আঞ্চলিক সড়কের কাঠালতলী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি প্রাইভেট কারের সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সাহেদ মারা যান এবং রুমন গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন রুমনকে উদ্ধার করে প্রথমে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। কিন্তু রাত সাড়ে ৯টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রুমনও চলে যান না ফেরার দেশে। বড়লেখা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নিউটন দত্ত সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টা নিশ্চিত করে বলেন, কার ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে বড় ভাই সুমন ঘটনাস্থলে মারা যান। তার লাশ থানায় আনা হয়েছে। আহত রুমনকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা গেছেন। বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম সরকার বলেন, দুর্ঘটনার পর প্রাইভেট কারটির চালক পালিয়ে গেছেন। তবে গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে।