কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রেখে মাঠে গরুর হাট বসিয়েছেন ইজারাদার। কালের কণ্ঠে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর বিদ্যালয় মাঠ থেকে হাট অপসারণ করতে গেলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বাজার পরিচালনাকারী যুবদল নেতা মো. আক্তারুজ্জামান। পরে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দেয় ওই যুবদল নেতা। জানা যায়, সোমবার (২ জুন) বিকেলে চান্দিনা উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর গরু বাজারে গিয়ে ইজারাদার ও তার সহযোগীদের কাছে হেনস্তার শিকার হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ফয়সাল আল নুর। এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে আওয়ামী লীগের দালাল, ফ্যাসিস্টের দোসর আখ্যা দিয়ে ‘ধর ধর’ বলে ধাওয়া করেন দুস্কৃতিকারীরা। এক পর্যায়ে সাথে থাকা পুলিশ সদস্য ও ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহায়তা দোল্লাই নবাবপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অবস্থান নেন ম্যাজিস্ট্রেট। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দেন বাজার পরিচালনাকারী ও দোল্লাই নবাবপুর ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি মো. আক্তারুজ্জামান। এর আগে, সোমবার দুপুর ১২টা থেকে চান্দিনা উপজেলার যেসব স্কুল মাঠে গরুর হাট বসেছে ওইসব হাটে সরেজমিন ঘুরে প্রতিবেদন প্রকাশ করে কালের কণ্ঠ। প্রকাশিত ওই সংবাদ প্রশাসনের নজরে আসলে অভিযানে যান ভ্রাম্যমাণ আদালত। চান্দিনা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাও. আবুল খায়ের বলেন, আক্তারুজ্জামান দোল্লাই নবাবপুর ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি। তবে গরুর বাজার নিয়ে ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানি না। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আল নুর জানান, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে স্কুল মাঠে গরু বাজার বসানো হয়। আমরা অভিযানে গেলে বাজার পরিচালনাকারী ও ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি আক্তারুজ্জামানের উস্কানিতে তার লোকজন সরকারি কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে এবং আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়। পরে তারা ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দেয়। এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ আশরাফুল হক জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে গরুর বাজার বসানোর খবর পেয়ে মাঠ থেকে বাজার অপসারণের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করতে যায়। এ সময় ইজারাদারের লোকেরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে অসদাচরণ করে। পরে সেনাবাহিনীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তিনি জানান, স্থানীয়দের উপস্থিতিতে ইজারাদার ক্ষমা প্রার্থনা করে মুচলেকা দেন এবং পরবর্তীতে ওই বিদ্যালয় মাঠে হাট বসাবেন না বলে মৌখিকভাবে প্রতিশ্রুতি দেন।