রাজধানীর নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজ-এর কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতি ও অনিয়মের কারণে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি দুই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন শিক্ষার্থীদের পরিবার ও স্বজনরা। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন—ইয়াসির আরাফাত ও সাজ্জাদ হোসেন, দুজনই মানবিক বিভাগের ছাত্র। অভিযোগ অনুযায়ী, কলেজ কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সময়েও তাদের হাতে এডমিট কার্ড তুলে দেয়নি, ফলে তারা আজকের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। বৃহস্পতিবার সকালে উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে গিয়ে দেখা যায়, যখন অন্যান্য শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে, তখন ওই দুই শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা কলেজের সামনে কান্নাকাটি করছে। ভুক্তভোগী ইয়াসির আরাফাত বলেন, “গতকাল রাত ১২টা পর্যন্ত আমাদের কলেজে বসিয়ে রাখা হয়। তখন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ম্যাডাম ইভানা তালুকদার বলেন, সকালে এসে এডমিট কার্ড নিয়ে যেতে। কিন্তু আজও তা পাইনি। যাওয়ার সময় আমাদের বলা হয়, এই বিষয়ে যেন কাউকে কিছু না বলি, না হলে পরীক্ষায় বসতে দেবেন না।” অন্য ভুক্তভোগী সাজ্জাদ হোসেন জানান, তার সঠিক রোল নম্বর ছিল ১০৯১, কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই রোলে অন্য একজনকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়েছে। তার বাবা আবদুল গফুর অভিযোগ করেন, “ওরা টাকা খেয়ে আমার ছেলের রোলে অন্যজনকে ঢুকিয়ে দিয়েছে। এটা সরাসরি প্রতারণা। আমরা গতকাল রাতেও কলেজে গিয়েছি, ম্যাডাম বলেছিলেন সকালে কার্ড পাবো। কিন্তু আজ ফোনও ধরছে না কেউ।” সাজ্জাদের মা বিলকিস বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “সকাল থেকে কলেজের গেটে দাঁড়িয়ে আছি। কেউ দেখতেও আসেনি, ফোনও ধরছে না। আমার ছেলের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে।” এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইভানা তালুকদার-এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে গভর্নিং বডির দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও ডিএনসিসি অঞ্চল-১০ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান,“বিষয়টি গতকাল রাতেই জানতে পারি। দায়িত্বরত এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রমাণ মিললে যাদের গাফিলতি রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।” ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের পরিবারসহ সচেতন অভিভাবক মহল।