কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠানে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় মূলহোতা সিফাত ও আবরারসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), কোতোয়ালি থানা পুলিশ ও র্যাব। রবিবার ও সোমবার কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকা ও বুড়িচং উপজেলায় যৌথ অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ। রবিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠানের সময় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে চারজন গুরুতর আহত হন। আহতরা হলেন—মোস্তাফিজুর রহমান, অনয় দেবনাথ, মো. মাহিন ও মো. রিজভী। তাদেরকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সকাল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শাখার ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী জিসান ও তাহফিদের সঙ্গে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীন সিফাতের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সিফাত ফাহাদকে হামলা করে এবং জিসানকে হুমকি দেয়।
পরে ফাহাদ ও সিফাতের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। কিছুক্ষণ পর সিফাত তার বিভিন্ন কলেজে পড়ুয়া বন্ধুদের ডেকে আনে। বেলা ১২টার কিছু পর শিক্ষার্থীরা কলেজ থেকে বের হওয়ার সময় সিফাত ধারালো অস্ত্র নিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। এ ঘটনার একটি ১২ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, এক তরুণ হাতে ধারালো রামদা নিয়ে অন্যদের ধাওয়া করছে। আরেকজনের হাতে পিস্তল দেখা গেলেও তার মুখ স্পষ্ট নয়। পরে জানা যায়, রামদা হাতে থাকা তরুণটি সিফাত। কলেজ অধ্যক্ষ আবুল বাসার ভূঁঞা বলেন, “ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আহতদের কেউ ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী নয়, তবে কয়েকজন ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত। বিষয়টি তদন্তে আমরা একটি কমিটি গঠন করবো। প্রশাসনকে জানানো হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদেরও অবহিত করা হচ্ছে।” কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহিনুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার পরপরই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ডিবি, কোতোয়ালি থানা পুলিশ ও র্যাব যৌথভাবে অভিযান চালায়। রবিবার রাতে ও সোমবার সকালে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ও বুড়িচং উপজেলায় অভিযান চালিয়ে মূলহোতাসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে ডিবি ও কোতোয়ালি থানার যৌথ অভিযানে ১৫ জন এবং র্যাব ২ জনকে গ্রেফতার করে।”
