টানা ১৪ বারের মতো সেরার তকমা জুটল কুমিল্লার সোনার বাংলা কলেজের। জেলা শহর থেকে থেকে দশ কিলোমিটারের বেশি দূরে বুড়িচং উপজেলার গোবিন্দপুরের নিভৃত পল্লীর কলেজটি এবারও শতভাগ পাসের রেকর্ড গড়েছে। ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সোনার বাংলা কলেজ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে টানা ১৪ বার শতভাগ সাফল্য অর্জন করে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় কলেজের মোট ৩৭১ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে সবাই উত্তীর্ণ হয়েছে। এর মধ্যে ১৪৮ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে। বিভাগভিত্তিক ফলাফলে দেখা যায়—বিজ্ঞান বিভাগে ১৩৩ জনের মধ্যে ১১২ জন জিপিএ-৫ অর্জন করেছে।মানবিক বিভাগে১২৭ জন শিক্ষার্থী সবাই পাস করেছে, এর মধ্যে ২৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১১১ জনের সবাই পাস করেছে, ৮ জন জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। বুড়িচং উপজেলার ভরাসার বাজারসংলগ্ন গোবিন্দপুরে অবস্থিত এই কলেজটি ২০০০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ফলাফলে ধারাবাহিক উৎকর্ষ ধরে রেখেছে। ২০১২ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত টানা ১৪ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় শতভাগ পাশের সাফল্য অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি কুমিল্লা বোর্ডে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কলেজের ১৪ বছরের ফলাফলের পরিসংখ্যান বলছে—২০১২ সালে ২৬৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে ৬০ জন জিপিএ-৫ পেয়েছিল। ২০১৩ সালে ৩০২ জনে ৬৭ জন, ২০১৪ সালে ৩৩৭ জনে ১৩৩ জন, ২০১৫ সালে ৩৬০ জনে ১২৭ জন, ২০১৬ সালে ৩১৯ জনে ৯৩ জন, ২০১৭ সালে ৩০৫ জনে ৫০ জন, ২০১৮ সালে ৪৩৯ জনে ৮৪ জন, ২০১৯ সালে ৩৬৩ জনে ১০৪ জন, ২০২০ সালে ৩৬৭ জনে ১৬১ জন, ২০২১ সালে ৪১৭ জনে ২৪৪ জন, ২০২২ সালে ৪২১ জনে ৩৯৬ জন, ২০২৩ সালে ৩৭৪ জনে ২৪৭ জন, ২০২৪ সালে ৩৬৮ জনে ২৪৫ জন এবং ২০২৫ সালে ৩৭১ জনে ১৪৮ জন জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। শুধু ফলাফল নয়, একাডেমিক উৎকর্ষের পাশাপাশি এই কলেজের শিক্ষার্থীরা জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও বিভিন্ন অলিম্পিয়াডে নিয়মিত সাফল্য অর্জন করে আসছে।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট সদস্য আবু ছালেক মোঃ সেলিম রেজা সৌরভ বলেন,“শৃঙ্খলার অনুশীলন, উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ, পূর্ণ প্রস্তুতিতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণ, শিক্ষার্থীদের মানসিক-শারীরিক বিকাশে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকের নিবিড় সংযোগের মাধ্যমেই আমরা এ ধারাবাহিক সাফল্য অর্জন করেছি। সুযোগ্য গভর্নিং বডির দিকনির্দেশনা, নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষকবৃন্দের পরিশ্রম এবং শিক্ষার্থীদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এ সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।”
তিনি আরও জানান,ভালো ফলাফলের পাশাপাশি আদর্শ ও মানবিক গুণে গড়ে তোলা ভালো মানুষ তৈরি করাই সোনার বাংলা কলেজের মূল লক্ষ্য, এবং এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে তাঁদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
