জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এসব কেন্দ্র মূলত হলের ভেতরে থাকায় নির্বাচন চলাকালে সাংবাদিকরা নিয়মিত পরিদর্শন করছেন। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ভোটগ্রহণ চলাকালে মেয়েদের একটি হলে সাংবাদিকরা প্রবেশ করলে ঘণ্টা বাজানো হয়। পরে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। জানা গেছে, দুপুরের দিকে মেয়েদের এক হলে জাল ভোট দেওয়ার খবরে প্রবেশ করেন সাংবাদিকরা। তাদের প্রবেশের পর ঘণ্টা বাজানো হলে তা নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে নানা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দেখা যায়। কেউ কেউ দাবি করেন, সাংবাদিক প্রবেশ দেখে ঘণ্টা বাজিয়ে ‘সতর্ক সংকেত’ দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা ভিন্ন ব্যাখ্যা দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা জানান, হলে মেয়েরা স্বাভাবিক পরিবেশে পরিবারের মতোই অবস্থান করেন। তাই সেখানে পুরুষ প্রবেশ করলে খালারা (নারী কর্মচারী) ঘণ্টা বাজিয়ে সংকেত দেন। এমনকি জরুরি প্রয়োজনে ইলেকট্রিশিয়ান বা প্লাম্বার প্রবেশ করলেও একই নিয়ম অনুসরণ করা হয়। নির্বাচনের দিনও সেই নিয়মেই ঘণ্টা বাজানো হয়, তবে অনেকেই বিষয়টি না বুঝে ইস্যু তৈরি করেছেন। সাংবাদিক জীবন আহমেদ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, “প্রথমে বুঝতে পারিনি কেন ঘণ্টা বাজানো হচ্ছে। পরে একজন জানালেন, মেয়েদের হলে পুরুষ প্রবেশ করলে সংকেত দেওয়ার জন্য ঘণ্টা বাজানো হয়।” অন্য সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম স্মৃতিচারণ করে লেখেন, “কয়েক বছর আগে শেখ হাসিনা হলে ইন্টারভিউ নিতে ঢুকেছিলাম। তখনও সিকিউরিটি গার্ড আমার সাথে ঘণ্টা বাজাতে বাজাতে গিয়েছিলেন।” জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী তাওফিয়া হোসেন লিখেছেন, “ঘণ্টা বাজানো হলো নিয়মিত প্রক্রিয়া। অথচ বড় বড় মিডিয়া এটিকে ভোট চুরির সংকেত হিসেবে চালাচ্ছে—যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।” সামগ্রিকভাবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত প্রথা হলেও ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাস্যরস, সমালোচনা ও ভুল ব্যাখ্যা ছড়িয়ে পড়ে।
