কুমিল্লায় আলোচিত অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি কুমিল্লা মহানগরীর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মো. বাচ্চু মিয়ার (ওরফে কালা বাচ্চু) পক্ষে কুমিল্লা আদালতে কোন আইনজীবী শুনানীর জন্য দাড়াননি। আটকের পর ৭ এপ্রিল সোমবার কুমিল্লা আদালতে হাজির করলে বাচ্চু মিয়ার পক্ষে শুনানীতে অংশ নেননি কোন আইনজীবী। পরে বিচারক দ্রুত বাচ্চু মিয়াকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত অন্যতম আসামি মো. বাচ্চু মিয়া (৪২) কে গ্রেপ্তার করে যৌথবাহিনী। গত রবিবার (৩০ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লা লালমাই বিজয়নগর এলাকায় যৌথ টহল দল একটি অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সহকর্মী আইনজীবীরা, অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ হত্যা মামলার বিচার নিশ্চিত করতে কুমিল্লা বারের আইনজীবীরা আসামীদের পক্ষে না দাড়ানো বা কোন প্রকান শুনানীতে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কুমিল্লা বারের এক সিনিয়র আইনজীবী এই প্রতিবেদককে জানান, অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ ছিলেন কুমিল্লা বারের একজন সদালাপি ভদ্র সিনিয়র আইনজীবী। তিনি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাথে যুক্ত ছিলেন, তবে কোনদিন কারো সাথে সম্পর্ক খারাপ করেননি। তাকে নির্মমভাবে গুলি করে খুন করে কুমিল্লা সিটিকর্পোরেশনের ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সৈয়দ রায়হান আহম্মেদের নেতৃত্বে বাচ্চু গংরা। আমরা সহকর্মী খুনের বিচার নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ থাকবো। স্থানিয়ভাবে জানা গেছে, কুমিল্লার শীর্ষ চাঁদাবাজ ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে কুমিল্লা অবৈধ সিএনজি থেকে চাঁদা উত্তোলনকারী ছিল এই বাচ্চু মিয়া ওরফে কালা বাচ্চু। কুমিল্লা নগরীর ঈদগা মোড়ে অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড পরিচালনা করে ভারত সীমান্ত এলাকা থেকে দেশের বিভিন্নস্থানে মাদক সরবরাহ করত। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর কুমিল্লা নগরীতে আনন্দ মিছিল ও সহিংসতা শুরু হয়। আদালতে সহিংসতার খবর শুনে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি কাইমূল হক রিংকু, তার দুই ছেলে এবং অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদসহ কয়েকজন আইনজীবী আদালতে যাওয়ার পথে হামলার শিকার হন। আইনজীবীরা মোগলটুলী চৌমুহনী এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ রায়হানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ও ককটেল ছোড়ে। এ সময় অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ কোমরে গুলিবিদ্ধ হন এবং রিংকু ও তার দুই ছেলেসহ আরো ৬-৭ জন আইনজীবী আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের কুমিল্লা মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে আবুল কালামের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে আইসিইউতে এবং পরবর্তীতে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ১০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে তিনি মারা যান।