কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার স্বনামধন্য কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফজলুর রহমান মেমোরিয়াল কলেজ অব টেকনোলজি দুই যুগ পূর্তি উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য রি-ইউনিয়ন ও মিলনমেলার আয়োজন করে। সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় আনন্দ ও উচ্ছ্বাসে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। দিনব্যাপী আয়োজনের মধ্য দিয়ে কলেজ প্রাঙ্গণ পরিণত হয় এক প্রাণের উৎসবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আমার জীবনের অনেকটা সময় এই প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ব্যয় করেছি। শুরু থেকে অদ্যাবধি সকল কার্যক্রমে নিজেকে নিয়োজিত রাখার চেষ্টা করেছি। আমাকে প্রধান অতিথি না করলেও আমি এই অনুষ্ঠানে অবশ্যই উপস্থিত থাকতাম, কারণ এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, একদিন এই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নেবে এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করবে। সকেল ৭টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে নানা কর্মসূচি। পূর্ববর্তী শিক্ষার্থীদের আড্ডা, স্মৃতিচারণ, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, ফটোসেশনসহ আরও অনেক আয়োজন। প্রতিটি পর্বেই শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অতিথিদের অংশগ্রহণে পুরো অনুষ্ঠান প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। কলেজের শিক্ষক গিয়াস উদ্দীন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ আবু তাহের, যিনি প্রতিষ্ঠানের শুরু থেকেই দিকনির্দেশনা দিয়ে আসছেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ২০০২ সালে ফজলুর রহমানের নিজস্ব জমিতে এই কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় আমরা অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছিলাম। কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকার মানুষের সহযোগিতায় আজ এটি একটি মানসম্মত কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোঃ মাকসুদুর রহমান এবং বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তানভির হোসেন। তারা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জন ও দেশগঠনে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। সাংস্কৃতিক পর্বে গান, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি ও নাটিকাসহ বিভিন্ন পরিবেশনায় পুরো মিলনমেলা আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। সাবেক শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন পর পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়ায় তাদের মনে নস্টালজিয়ার আবেশ তৈরি হয়েছে। ফজলুর রহমান মেমোরিয়াল কলেজ অব টেকনোলজি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগে তিনবার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। আধুনিক ল্যাব, দক্ষ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিষ্ঠাপূর্ণ চর্চার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে প্রযুক্তি শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে।
