বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় এক প্রবাসীর বাবা ও স্ত্রীর হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাতে দুপচাঁচিয়া উপজেলার জিয়ানগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীমণ্ডপ গ্রাম থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন সৌদি প্রবাসী শাহজাহান আলীর বাবা অবসরপ্রাপ্ত মাদরাসা শিক্ষক আবতাব উদ্দিন (৭০) ও তার স্ত্রী রিভা আক্তার (৩০)। স্থানীয় সূত্র জানায়, শাহজাহান তার বাবা, স্ত্রী ও সন্তান রেখে সৌদি আরব অবস্থান করছেন। ঘটনার দিন রাতে মাটির বাড়ির দরজা ভেঙে একদল দুর্বৃত্ত বাড়িতে প্রবেশ করে তাদের হাত-পা ও মুখ বেঁধে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বাড়ির আসবাবপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। ঘটনায় বেঁচে থাকা শাহজাহানের মেয়ে রেবেকা তাসনিম মালিহা (৮) সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে স্থানীয়দের খবর দিলে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে। নিহত আবতাবের খালাতো ভাই আমজাদ হোসেন জানান, তিনি মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন। এখন তিনি কৃষিকাজে ব্যস্ত থাকেন। তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় ছেলে শাহজাহান সৌদি প্রবাসী এবং ছোট ছেলে সিহাব পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভাইয়ের সঙ্গে গ্রামের কারো তেমন বিরোধ ছিল না। তবে জমিজমাসংক্রান্ত মামলা-মোকদ্দমা রয়েছে। এ ঘটনা থেকেও এ হত্যাকাণ্ড হতে পারে।’ জিয়ানগর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘নিহত আবতাবের কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ ছিল না। তিনি একজন ভালো মানুষই ছিলেন। কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তা বলা মুশকিল।’ দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে হত্যাকাণ্ডে রহস্য উদঘাটন ও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’ বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) হোসাইন মোহাম্মাদ রায়হান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে এসে দুজনের লাশ পেয়েছি এবং পরিবারের ৮ বছরের জীবিত আরো একজন শিশুকে পেয়েছি। তার সঙ্গে এখনো কোনো কথা আমাদের হয়নি। প্রাথমিকভাবে আমাদের ধারণা এটা দস্যুতার ঘটনা।’