এবারের কোরবানির হাটে গরুগুলো বিক্রি করার কথা ছিল, কিন্তু তা আর হলো না। এর আগেই দুর্বৃত্তরা গোয়ালে রাখা তিনটি গরুকে খাবার পানিতে বিষ মিশিয়ে মেরে ফেলেছে। রবিবার (১ জুন) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামে। পরে রাতে এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো. তাজুল ইসলাম। তিনি ওই গ্রামের জুলফু মিয়ার ছেলে। এদিকে এভাবে গরু মেরে ফেলার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এতে আতঙ্কিত বলে জানান গ্রামের অন্য প্রান্তিক কৃষক ও খামারিরা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, রবিবার দুপুরে কৃষক তাজুল ইসলাম গোয়ালের পাঁচটি গরুকে শুকনা খাবার ও পানি খাইয়ে বাজারে যান। বিকেলে বাজার থেকে বাড়ি এসে দেখেন গোয়ালে রাখা পাঁচটি গরুর মধ্যে তিনটি গরু মরে পড়ে আছে। এর মধ্যে ২টি গরু এবারের ঈদে বিক্রি করার কথা ছিল। সকালে বাড়িতে ক্রেতারা এসে দরদামের পর আশানুরূপ না হওয়ায় আর বিক্রি করেননি। কারা গরুগুলো মারল তা কেউ দেখেনি। ক্ষতিগ্রস্ত মো. তাজুল ইসলাম বলেন, এ তিনটি গরু মধ্যে দুটি এবারের কোরবানির ঈদে বিক্রি করার কথা ছিল। ইতোমধ্যে সকালে দুজন ক্রেতা বাড়িতে এসে দরদাম করে গেছেন। আরেকটি ৮ মাসের গর্ভবর্তী গাভি ছিল। দুর্বৃত্তরা তিনটি গরুই মেরে ফেলেছে। খাবারের পানিতে বিষ দিয়ে গরুগুলো হত্যা করা হয়েছে। এতে প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাজুল ইসলামের স্ত্রী অহিদা বেগম বলেন, অনেক কষ্ট করে ৩০ বছর ধরে গরু পালছি। এমন ঘটনা আর কোনোদিনও হয়নি। কিস্তিতে টাকা তুলে গরুগুলো কিনছিলাম। গোয়ালে মোট ৫টি গরু ছিল। এর মধ্যে একটা গাভির দুধ বিক্রি করে কোনো রকম সংসার চালিয়েছি। দুর্বৃত্তরা আমার শেষ সম্বলটুকুও কেড়ে নিল। আমরা এর বিচার কার কাছে দেব? আমাদের তো কারো সঙ্গে কোনো শত্রুতা নেই। কে এই কাজটা করল বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, স্থানীয় কয়েকজনের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। এটি খুবই নিন্দনীয় কাজ। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী কৃষক যদি থানায় লিখিত অভিযোগ দেন, তাহলে আমরা অপরাধীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।