৮৮ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রথম ল্যাটিন আমেরিকান পোপ ফ্রান্সিস। ফিলিস্তিন ইস্যুতে সরব ছিলেন এ খ্রিষ্টধর্ম যাজক। ‘দুই রাষ্ট্র সমাধান’ অর্থাৎ, ইসরাইল ও ফিলিস্তিন উভয়েরই আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র থাকা উচিত অবস্থানকে সমর্থন করে গেছেন তিনি। মৃত্যুর একদিন আগেও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছিলেন ফ্রান্সিস। এক কথায় বলা যায় – পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে ফিলিস্তিন এক অকৃত্রিম বন্ধু হারালো। রোববার (২০ এপ্রিল) খ্রিষ্ট ধর্মীয় উৎসব ‘ইস্টার সানডে’ উপলক্ষে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। এদিন ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে খোলা আকাশের নিচে জড়ো হওয়া হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ জনতার সামনে এ আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেখানে ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরাইলের ১৮ মাসব্যাপী যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট শোচনীয় মানবিক পরিস্থিতির নিন্দা করেন। এদিন নেতানিয়াহু প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে পোপ ফ্রান্সিস বলেছিলেন, ‘আমি যুদ্ধরত পক্ষগুলোর কাছে আবেদন করছি: যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করুন, জিম্মিদের মুক্তি দিন এবং শান্তির ভবিষ্যতের আকাক্সক্ষা পোষণকারী ক্ষুধার্ত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসুন।’ শুধু ‘ইস্টার সানডে’র দিনেই নয়; আগেও ইসরাইলি সামরিক আগ্রাসনের সমালোচনা করে গেছেন ফ্রান্সিস। গত জানুয়ারিতে তিনি গাজার পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত গুরুতর এবং লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছিলেন। একই সঙ্গে অঞ্চলটিতে ইসরাইলি ‘গণহত্যার’ তদন্ত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছিলেন। অ্যাঙ্গিকানস, লুথারানস এবং ম্যাথোডিস্টদের সঙ্গে কাজ করেছিলেন ফ্রান্সিস। ইসরাইলি এবং ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টদের তার সঙ্গে শান্তি প্রার্থনায় যোগ দিতে রাজি করিয়েছিলেন। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পর ২০১৫ সালের ১৩ মে ভ্যাটিকান সিটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের প্রথম চুক্তি স্বাক্ষরের ইচ্ছা প্রকাশ করে। ২০১৫ সালের ২৬ জুন হলি সি এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৪ সালে পোপ ফ্রান্সিস ভ্যাটিকানে তৎকালীন ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেস এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে আমন্ত্রণ জানান, এক ঐতিহাসিক শান্তি প্রার্থনা আয়োজন করেন। এটি ছিল যুগ যুগ ধরে চলা দুই পক্ষকে শান্তি ও সহাবস্থানের পথে হাঁটতে তার যুগান্তকারী প্রয়াস। পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন মানবতাবাদী ও সহানুভূতিশীল। তার ধর্মোপদেশে সবসময় থাকতো সামাজিক অন্তর্ভুক্তির আহ্বান। একইসঙ্গে সমাজের সবচেয়ে দরিদ্র মানুষের প্রতি মনোযোগ দিতে সরকারগুলোর ব্যর্থতার সমালোচনা করতেন তিনি। ফ্রান্সিস বলতেন, আমরা বিশ্বের সবচেয়ে অসম অংশে বাস করছি। দারিদ্র্য উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, এখনও দুঃখ-দুর্দশা কমেনি। মূলত পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন শান্তিকামী ও যুদ্ধবিরোধী। শুধু গাজায় নয়; দক্ষিণ সুদানের সংঘাত অবসানের জন্যেও সোচ্চার ছিলেন তিনি। যুদ্ধ থামাতে সুদানের নেতাদের আহ্বান জানাতে ২০২৩ সালে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনকে ‘অযৌক্তিক এবং নিষ্ঠুর যুদ্ধ’ আখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। এ যুদ্ধ অবসানের আহ্বান জানিয়েছিলেন। ২০১৭ সালে বাংলাদেশে সফরে এসেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। সফরকালে ঢাকায় আয়োজিত গণপ্রার্থনাস্থলে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের দুর্দশার কথা শোনেন। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ নিয়ে ‘পোপ ফ্রান্সিস থ্রি জিরোস ক্লাব’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম শুরু করেছে ভ্যাটিকান সিটি। মানবতার জন্য একটি রূপান্তরমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের সূচনার জন্য এ উদ্যোগটি চালু করা হয়েছে। জঙ্গি গোষ্ঠীকে ধর্মীয় পরিচয় দিয়ে ব্যাখ্যার পক্ষে ছিলেন না ফ্রান্সিস। এক সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার পর তিনি বলেছিলেন, ‘হিংস্রতা দিয়ে ইসলামকে চিহ্নিত করা ঠিক নয়।’ তিনি ঘোষণা করেন, ‘আমি যদি ইসলামিক সহিংসতার কথা বলি তাহলে আমাকে ক্যাথলিক সহিংসতার কথাও বলতে হবে।’ পোপ ফ্রান্সিসের আসল নাম জর্জ মারিও বেরগোলিও। পোপ হওয়ার আগে ফ্রান্সিস আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেসের আর্চবিশপ ছিলেন এবং ২০০১ সালে কার্ডিনাল পদে অধিষ্ঠিত হন। তার পরিচিতি ছিল একজন বিনয়ী ও সাধারণ জীবনধারার ধর্মীয় নেতা হিসেবে। সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ক্যাথলিক ৮৮ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রথম ল্যাটিন আমেরিকান পোপ ফ্রান্সিস। ফিলিস্তিন ইস্যুতে সরব ছিলেন এ খ্রিষ্টধর্ম যাজক। ‘দুই রাষ্ট্র সমাধান’Ñ অর্থাৎ, ইসরাইল ও ফিলিস্তিন উভয়েরই আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র থাকা উচিত অবস্থানকে সমর্থন করে গেছেন তিনি। মৃত্যুর একদিন আগেও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছিলেন ফ্রান্সিস। এক কথায় বলা যায় – পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে ফিলিস্তিন এক অকৃত্রিম বন্ধু হারালো। রোববার (২০ এপ্রিল) খ্রিষ্ট ধর্মীয় উৎসব ‘ইস্টার সানডে’ উপলক্ষে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। এদিন ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে খোলা আকাশের নিচে জড়ো হওয়া হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ জনতার সামনে এ আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেখানে ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরাইলের ১৮ মাসব্যাপী যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট শোচনীয় মানবিক পরিস্থিতির নিন্দা করেন। এদিন নেতানিয়াহু প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে পোপ ফ্রান্সিস বলেছিলেন, ‘আমি যুদ্ধরত পক্ষগুলোর কাছে আবেদন করছি: যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করুন, জিম্মিদের মুক্তি দিন এবং শান্তির ভবিষ্যতের আকাক্সক্ষা পোষণকারী ক্ষুধার্ত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসুন।’ শুধু ‘ইস্টার সানডে’র দিনেই নয়; আগেও ইসরাইলি সামরিক আগ্রাসনের সমালোচনা করে গেছেন ফ্রান্সিস। গত জানুয়ারিতে তিনি গাজার পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত গুরুতর এবং লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছিলেন। একই সঙ্গে অঞ্চলটিতে ইসরাইলি ‘গণহত্যার’ তদন্ত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছিলেন। অ্যাঙ্গিকানস, লুথারানস এবং ম্যাথোডিস্টদের সঙ্গে কাজ করেছিলেন ফ্রান্সিস। ইসরাইলি এবং ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টদের তার সঙ্গে শান্তি প্রার্থনায় যোগ দিতে রাজি করিয়েছিলেন। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পর ২০১৫ সালের ১৩ মে ভ্যাটিকান সিটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের প্রথম চুক্তি স্বাক্ষরের ইচ্ছা প্রকাশ করে। ২০১৫ সালের ২৬ জুন হলি সি এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৪ সালে পোপ ফ্রান্সিস ভ্যাটিকানে তৎকালীন ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেস এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে আমন্ত্রণ জানান, এক ঐতিহাসিক শান্তি প্রার্থনা আয়োজন করেন। এটি ছিল যুগ যুগ ধরে চলা দুই পক্ষকে শান্তি ও সহাবস্থানের পথে হাঁটতে তার যুগান্তকারী প্রয়াস। পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন মানবতাবাদী ও সহানুভূতিশীল। তার ধর্মোপদেশে সবসময় থাকতো সামাজিক অন্তর্ভুক্তির আহ্বান। একইসঙ্গে সমাজের সবচেয়ে দরিদ্র মানুষের প্রতি মনোযোগ দিতে সরকারগুলোর ব্যর্থতার সমালোচনা করতেন তিনি। ফ্রান্সিস বলতেন, আমরা বিশ্বের সবচেয়ে অসম অংশে বাস করছি। দারিদ্র্য উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, এখনও দুঃখ-দুর্দশা কমেনি। মূলত পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন শান্তিকামী ও যুদ্ধবিরোধী। শুধু গাজায় নয়; দক্ষিণ সুদানের সংঘাত অবসানের জন্যেও সোচ্চার ছিলেন তিনি। যুদ্ধ থামাতে সুদানের নেতাদের আহ্বান জানাতে ২০২৩ সালে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনকে ‘অযৌক্তিক এবং নিষ্ঠুর যুদ্ধ’ আখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। এ যুদ্ধ অবসানের আহ্বান জানিয়েছিলেন। ২০১৭ সালে বাংলাদেশে সফরে এসেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। সফরকালে ঢাকায় আয়োজিত গণপ্রার্থনাস্থলে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের দুর্দশার কথা শোনেন। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ নিয়ে ‘পোপ ফ্রান্সিস থ্রি জিরোস ক্লাব’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম শুরু করেছে ভ্যাটিকান সিটি। মানবতার জন্য একটি রূপান্তরমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের সূচনার জন্য এ উদ্যোগটি চালু করা হয়েছে। জঙ্গি গোষ্ঠীকে ধর্মীয় পরিচয় দিয়ে ব্যাখ্যার পক্ষে ছিলেন না ফ্রান্সিস। এক সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার পর তিনি বলেছিলেন, ‘হিংস্রতা দিয়ে ইসলামকে চিহ্নিত করা ঠিক নয়।’ তিনি ঘোষণা করেন, ‘আমি যদি ইসলামিক সহিংসতার কথা বলি তাহলে আমাকে ক্যাথলিক সহিংসতার কথাও বলতে হবে।’ পোপ ফ্রান্সিসের আসল নাম জর্জ মারিও বেরগোলিও। পোপ হওয়ার আগে ফ্রান্সিস আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেসের আর্চবিশপ ছিলেন এবং ২০০১ সালে কার্ডিনাল পদে অধিষ্ঠিত হন। তার পরিচিতি ছিল একজন বিনয়ী ও সাধারণ জীবনধারার ধর্মীয় নেতা হিসেবে। সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ।