কুমিল্লায় অটোরিকশা চালক পরাণ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাসহ ছিনতাইকারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান অটোরিকশার যন্ত্রাংশসহ ৭টি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার (২৬ মে) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন- সদর দক্ষিণ উপজেলার শাকতলা এলাকার মোঃ আবদুল হাকিমের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম জাবেদ (২৬), শাকতলা উত্তরপাড়া এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. রুবেল (২৮), মহিচাইল ইউনিয়নের অম্বরপুর এলাকার মো. আব্দুল রবের ছেলে মোঃ শরীফ (২৫), চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকার মৃত আরব রহমানের ছেলে মোঃ আমির হোসেন (৩২), একই এলাকার মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে মো. সোহাগ হোসেন (২৫)। পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান জানান, গত ১৭ মে (শুক্রবার) কুমিল্লা নগরীর টিক্কারচর এলাকার অটোরিকশা ড্রাইভার পরান অটোরিকশাসহ নিখোঁজ হন। পরবর্তীতে, সদর দক্ষিণ এলাকায় হারাতলী এলাকায় মহাসড়কে পিষ্ট অবস্থায় পরাণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় পরাণের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতওয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলার সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে, গত কিছুদিন ধরে কুমিল্লা মহানগরীসহ সদর দক্ষিন ও বুড়িচং থানা এলাকায় একটি চক্র প্রায় একই রকম বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটায়। পরে পুলিশের অভিযানে, পরান হত্যাকাণ্ডে জড়িত জাবেদকে গত ২৭ মে কুমিল্লা নগরীর গোবিন্দপুর এলাকা হতে গ্রেফতার করে। জাবেদের দেওয়া তথ্যমতে আরও ২ আসামি শরীফ, রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। পরে, চৌদ্দগ্রাম থানার শুভপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আমির হোসেন এর গ্যারেজে অভিযান চালিয়ে ৭টি অটোরিকশা, ৪টি অটোরিকশার ব্যাটারী এবং বেশ কিছু অটোরিকশার যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়। গ্যারেজ মালিক আমির হোসেন এবং তার সহযোগী সোহাগ মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ চোরাই অটোরিক্সা কিনে তাৎক্ষণিকভাবে রং সহ নানা রকম পরিবর্তন ঘটিয়ে অন্যত্র বিক্রয় করে আসছে। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ সন্ধ্যায় মহানগরীসহ আশপাশ এলাকা হতে কৌশলে অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে থাকে। একপযায়ে সুকৌশলে অটোরিকশার ড্রাইভারকে বিশেষ উপায়ে তৈরী চেতনানাশক মিশ্রিত বিস্কুট/কোমলপানীয় খাইয়ে মহাসড়কে ড্রাইভারকে ফেলে রেখে অটোরিকশাটি নিয়ে চলে যায়। এক্ষেত্রে চেতনাহীন ড্রাইভার মহাসড়কে ভারী যানবাহনে পিষ্ট হয়ে মৃত্যুবরন করে। জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত চক্রটি বেশ কয়েকটি ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) খন্দকার আশফাকুজ্জামান, কুমিল্লা কোতওয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ফিরোজ হোসেন, সদর সার্কেল কামরান হোসেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রাজেশ বড়ুয়াসহ প্রমুখ।

By তালাশ বাংলা ডেস্ক

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আক্কাস আল মাহমুদ হৃদয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *