কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, অসদাচরণ ও অভিভাবকদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের চান্দপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান (জুনায়েদ)-এর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন অভিভাবকদের পক্ষে রেবেকা সুলতানা নামে এক নারী। (২৮ অক্টোবর) মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিকদের নিকট এ অভিযোগ তুলে ধরেন। এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগে রেবেকা সুলতানা উল্লেখ করেন, “আমার দুই মেয়ে চান্দপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। নিয়মিত স্কুলে যাওয়া-আসার সময় শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান আমার সঙ্গে আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি ও অশালীন কথা বলেন। বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বড় মেয়েকে মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন।” তিনি আরও জানান, উক্ত শিক্ষক বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিত থাকেন না। সকাল ১১টার দিকে এসে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের মধ্যে চলে যান। একই সঙ্গে তিনি অলুয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও রেনেসা কিন্ডারগার্টেনে পার্টটাইম শিক্ষকতা করেন, ফলে বিদ্যালয়ে শিক্ষাদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। অভিযোগে আরও বলা হয়, ওই শিক্ষক প্রকাশনী থেকে টাকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট মেরিট গাইড কিনতে বাধ্য করেন। বিদ্যালয়ের অনুদানের টাকায় ভাউচার জালিয়াতির মাধ্যমে অনিয়ম করেন এবং প্রধান শিক্ষককে চাপ দিয়ে টাকা উত্তোলন করান। এছাড়া শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন ভাষায় গালাগালি করা, বই ও চক ছুঁড়ে মারা, এবং ব্যঙ্গাত্মক অঙ্গভঙ্গি করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগে আরও জানা যায়, তিনি এর আগে দুলালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। সেখানেও নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় এলাকাবাসীর চাপে বদলি হয়ে চান্দপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান (জুনায়েদ) বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক। আমি কোনো ধরনের অসদাচরণের সঙ্গে জড়িত নই।” ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হালিমা পারভিন বলেন, “চান্দপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে তিনি অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
