Spread the love

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দক্ষিণ তেতাভূমি এলাকার এক বসতঘর থেকে কাউসার (২৬) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় স্থানীয় কয়েকজন মিলে তাকে পিটিয়ে হত্যার পর ঘরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রাহ্মণপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাতে উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের দক্ষিণ তেতাভূমি এলাকায়। নিহত কাউসার ওই গ্রামের মৃত ফরিদ মিয়ার ছেলে। নিহতের মা রাজিয়া বেগম ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কাউসারের বাড়ির পাশে দুজন মোটরসাইকেল আরোহী মাদক সেবন করছিল। এ সময় কাউসার তাদের বাধা দেয় এবং মোটরসাইকেলে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। পরে স্থানীয় দোকানদার কাজল মিয়ার ছেলে ফেরদৌস ঘটনাটি নিয়ে কাউসারের সঙ্গে কথা বলতে আসে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে ফেরদৌস কাউসারকে চড়-থাপ্পড় মারে। পরবর্তীতে ফেরদৌসের সঙ্গে থাকা একই এলাকার মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে বিল্লাল (৪০), মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে ইউনুস মিয়া (৫০), তার ছেলে জুয়েল মিয়া (২২) ও মৃত দুলা মিয়ার ছেলে বাবুল (৪০) মিলে কাউসারকে এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর আহত করে। ছেলেকে বাঁচাতে গেলে কাউসারের মা রাজিয়া বেগমকেও তারা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এরপর রাজিয়া বেগম ঘরে চলে যান। কিছুক্ষণ পর কাউসার ঘরে ফিরে না আসলে রাত ১০টার দিকে তিনি ছেলের শয়নকক্ষে গিয়ে দেখেন, কাউসার তীরের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলে আছে। তার ডাকচিৎকারে বাড়ির লোকজন ছুটে এসে পুলিশে খবর দেয়। পরে ব্রাহ্মণপাড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে। ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই মো. আবদুস সবুর ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। নিহতের বোন ফারজানা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমার একমাত্র ভাইকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করে ঘরের ভেতর ঝুলিয়ে রেখেছে। আমরা অসহায়। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ব্রাহ্মণপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম তালাশ বাংলাকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করেছে। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মৃত কাউসারের হাতে রক্তাক্ত জখম ছিল। ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *