Spread the love

কুমিল্লার লাকসামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর মাথা ন্যাড়া করার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫০ টাকা করে আদায় করারও অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) লাকসাম পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে। একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক শাহজাহান কবিরের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের মাথা ন্যাড়া করার নির্দেশ দেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা গেছে, শাহজাহান কবির বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসায় শিক্ষার্থীদের ইংরেজি বিষয়ে প্রাইভেট পড়ান। যারা তার কাছে প্রাইভেট পড়ে, তাদের পরীক্ষায় বেশি নম্বর দেওয়া হয়। আর যারা পড়ে না, তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ নানা হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড চালানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বৃহস্পতিবার সকালেই সপ্তম থেকে দশম শ্রেণির প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষ থেকে ডেকে বিদ্যালয়ের পাশে একটি সেলুনে নিয়ে গিয়ে তাদের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়। এ সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫০ টাকা করে নেওয়া হয়। একজন শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা স্যারের প্রতিহিংসার শিকার। যারা স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়িনি, শুধু তাদেরই মাথা ন্যাড়া করা হয়েছে।” নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমার ছেলে স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়ে না, তাই বলে মাথা ন্যাড়া করা হবে কেন? এটা কোন আইনে করা হয়েছে?” অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক শাহজাহান কবির বলেন, “শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্টাইলে চুল কেটে বিদ্যালয়ে আসে। এতে ড্রেসকোড মানা হয় না। তাই চুল ছোট করে দিতে বলা হয়েছে। প্রাইভেট পড়ানো বা না পড়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।” লাকসাম পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এ বি এম এনায়েত উল্লাহ বলেন, “বিদ্যালয়ের ড্রেসকোড অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের চুল ছোট রাখতে বলা হয়েছে। কিন্তু মাথা ন্যাড়া করতে বলা হয়নি। প্রাইভেটের বিষয়টি শিক্ষকের ব্যক্তিগত বিষয়।” উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দীন বলেন, “শিক্ষার্থীদের চুল কাটার বিষয়ে বিদ্যালয় কমিটির অনুমোদন থাকা প্রয়োজন। সরকারি নিয়ম মেনে চুল কাটার পর ছবি সংরক্ষণ করতে হয়।” বিদ্যালয়ের সভাপতি ও লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নার্গিস সুলতানা বলেন, “ঘটনার বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে শিক্ষক কেন শিক্ষার্থীদের মাথা ন্যাড়া করেছেন—বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

By তালাশ বাংলা ডেস্ক

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আক্কাস আল মাহমুদ হৃদয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *