কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শংকুচাইল কেন্দ্রীয় মসজিদের কমিটি নিয়ে বির্তক ও তীব্র উত্তেজনার অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে গঠিত মসজিদ কমিটিকে পাশ কাটিয়ে একদল প্রভাবশালী ব্যক্তি গোপনে নতুন কমিটি গঠন করায় মুসল্লিদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। গত (১০ সেপ্টেম্বর) বুধবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ঈদুল ফিতরের পরদিন (১লা এপ্রিল ২০২৫) এক হাজারেরও বেশি এলাকাবাসীর স্বাক্ষর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে মসজিদের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে রয়েছেন এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ডা. আব্দুস সালাম, ডা. গোলাম সারোয়ার বিদ্যুৎ, শিল্পপতি মাসুদুর রহমান, এমরান খাঁনসহ অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি। পূর্বের কমিটির কোষাধ্যক্ষ এমরান খান ও স্থানীয়দের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দায়িত্ব গ্রহণের পর কমিটি মসজিদের আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রথমবারের মতো ঢাকাস্থ স্বনামধন্য সিএ ফার্ম বখতিয়ার ইস্রাফিল অ্যান্ড কোং এর মাধ্যমে অডিট কার্যক্রম শুরু করে। তবে পূর্ববর্তী কমিটির দায়িত্বশীল হাজী ইউনুস ভূঁইয়া ও মিজানুর রহমান মেম্বারকে একাধিকবার অফিসিয়াল চিঠি দেওয়া হলেও তারা কোনো হিসাব-নিকাশ জমা দেননি বরং উদ্ধত আচরণ প্রদর্শন করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। অডিট শেষে পূর্ববর্তী কমিটিগুলোর আয়-ব্যয়ে অনিয়ম ও অর্থ তছরুপের প্রমাণ মেলে। এরই ধারাবাহিকতায় অভিযোগ উঠেছে—পূর্ববর্তী কমিটির কিছু সদস্য এবং বর্তমান ইমাম মোস্তাফিজুর রহমান হেলাল গোপনে ওয়াকফ দপ্তরে আবেদন করে আরেকটি কমিটি অনুমোদন করিয়েছেন।
এলাকাবাসীর দাবি, প্রভাব খাটিয়ে ওয়াকফ পরিদর্শকের মাধ্যমে এই নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছে, জনগণের ইচ্ছায় গঠিত নির্বাচিত কমিটিকে উপেক্ষা করে গোপনে আরেকটি কমিটি গঠন ‘ষড়যন্ত্রমূলক’। এলাকাবাসীর একাধিক প্রতিনিধি বলেন, “আমরা জনগণের ইচ্ছায় গঠিত কমিটির পক্ষেই আছি। দুর্নীতিবাজ চক্রকে যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করা হবে।”তারা ধর্ম মন্ত্রণালয়, ওয়াকফ প্রশাসন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন—গ্রামবাসীর ইচ্ছাধীন কমিটিকে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কার্যকর করা হোক এবং শংকুচাইল গ্রামকে সম্ভাব্য সংঘাত থেকে রক্ষা করা হোক।
এ বিষয়ে মসজিদের ইমাম মোস্তাফিজুর রহমান হেলালের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বুড়িচং থানার ওসি আজিজুল হক বলেন, “শংকুচাইল মসজিদ কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের বিষয়টি আমি শুনেছি। তদন্ত করে উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব। যদি কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বুড়িচং উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তানভীর হোসেন জানান, “শংকুচাইল মসজিদের কমিটি নিয়ে যদি সমস্যা থাকে তাহলে থানার ওসি দেখবে, আমিও তদন্তে সহযোগিতা করব।”