Spread the love

কুমিল্লার বুড়িচং- ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০৯ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া ৫৩টি সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে বলে উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে। জানা যায়,প্রাথমিক শিক্ষার ভিত্তি যে সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে গড়ে ওঠে, সেই বিদ্যালয়গুলোই আজ চরম শিক্ষক সংকটে ভুগছে। এতে প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে শুরু করে শিক্ষাদান প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বুড়িচং উপজেলার ১৪৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫৩টিতে এবং ব্রাহ্মণপাড়ার ১০৮টি সরকারি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫৬টিতে প্রধান শিক্ষক নেই। শুধু তাই নয়, বুড়িচংয়ে ৩২টি এবং ব্রাহ্মণপাড়ায় ২১টি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদও শূন্য রয়েছে। এছাড়া, বুড়িচংয়ের কয়েকটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ সংক্রান্ত মামলা চলমান রয়েছে। এসব বিদ্যালয় হলো বাজেবাহেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাহিড়ীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাইকোঠা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজাপুর পূর্বপাড়া লালমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নামতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পরিহলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া নতুন পদ সৃষ্টি হওয়ায় শূন্য রয়েছে,ইছাপুরা-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর পশ্চিম গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাকশীমুল উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর জরুইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বুড়িচং হাজী ফজর আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিতে একসঙ্গে সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকের দ্বৈত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে তাঁদের। বিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলাতে অনেককে বেশ বেগ পেতে হয়। একাধিক অভিভাবক জানান, প্রধান শিক্ষকের পদ খালি থাকায় বিদ্যালয়গুলো অনেকটা অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। ভারপ্রাপ্তরা অনেক সময় সঠিক সিদ্ধান্তও নিতে পারেন না। বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ কামরুল হাসান বলেন, “প্রধান শিক্ষক না থাকলে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। একজন প্রধান শিক্ষককে দিনে দুটি ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি অন্য শিক্ষকদের ক্লাস মনিটরিং ও দাপ্তরিক কাজও করতে হয়। সহকারী শিক্ষক দিয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করালে উভয় কাজই বাধাগ্রস্ত হয়।” উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফওজিয়া আক্তার বলেন, “শূন্য পদের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। নতুন নিয়োগ হলে সংকট কেটে যাবে। লেখাপড়ার মান বজায় রাখতে আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছি।” বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তানভীর হোসেন বলেন, “সরকারি নিয়োগের মাধ্যমে এই সংকট সমাধান হবে। পদগুলো পূরণের জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।” এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লায় ২ হাজার ১০৭টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৯০৭টিতেই প্রধান শিক্ষক নেই। ১৩ হাজার ৩৭৬ সহকারী শিক্ষকের পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১ হাজার ৪২৪টি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *