Spread the love

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বর্ষণে হু হু করে বাড়ছে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি। ফলে ডুবতে বসেছে জেলার দক্ষিণ অঞ্চলের ৪ লাখ ১৬ হাজার মানুষ। বুধবার (৯ জুলাই) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে গোমতী নদীর পানি ৮ দশমিক ৫৬ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হয়, যা বিপদসীমার মাত্র আড়াই মিটার নিচে। গোমতীর বিপদসীমা কাছাকাছি। কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নদীর পানি প্রায় ৫ মিটার বেড়েছে। এর অন্যতম কারণ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢল। ত্রিপুরার পানি গোমতী হয়ে বাংলাদেশ অংশে ঢুকে পড়ায় কুমিল্লার নিম্নাঞ্চল ঝুঁকিতে পড়েছে। পাউবো কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো. ওয়ালিউজ্জামান জানান, ‘গোমতীতে পানি বাড়ছে। বৃষ্টি থেমে গেলেে এবং উজানের ঢল বন্ধ হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।’ এদিকে কুমিল্লা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার বিকেল ৩টা থেকে বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত) ১২৯ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আগামী ২৪ ঘণ্টাতেও ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ মো. আরিফ বলেন, সাগরে একটি লঘুচাপ রয়েছে, তবে তা ভারতের অংশে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগে আরও বৃষ্টিপাত হতে পারে। গোমতীর পানি বৃদ্ধি ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন সম্ভাব্য বন্যার আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, ৫৮৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও জিআর চাল মজুত রয়েছে। জেলা প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ বিষয়ে ইউএনও তানভীর হোসেন বলেন, “গোমতীর পানি এখনো বিপদসীমার আড়াই মিটার নিচে রয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই, তবে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।” তিনি আরও জানান, গোমতীর চরে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সমন্বয় করে দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *