টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে ফেনী শহরের বিভিন্ন আবাসিক এলাকা ও সড়ক। নাগরিক দুর্ভোগের এই চিত্রের পেছনে রয়েছে দীর্ঘদিনের খাল দখল, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং পৌরসভার গাফিলতি। গত ১৫ বছরে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পিটিআই খাল দখল করে ফেনী পৌরসভা নিজেই নির্মাণ করেছে মার্কেট। একইভাবে খাজা আহমদ লেক দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে পাঁচ শতাধিক দোকান। শহরের পানি নিষ্কাশনের প্রধান মাধ্যম পাগলিরছড়া খালও রক্ষা পায়নি—এখানেও গড়ে তোলা হয়েছে পৌরসভার ব্যানারে মার্কেট, ফলে সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। বিশেষ করে ফারুক হোটেল থেকে একাডেমি পর্যন্ত সড়কের জলাবদ্ধতার মূল কারণ অপর্যাপ্ত ও অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা। এ এলাকার ড্রেনগুলোর সঙ্গে কোনো খালের সংযোগ নেই, যার ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় জমে থাকে পানি। ৪০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক এলাকাতেও এখনো গড়ে ওঠেনি আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা। ফলে বছর জুড়েই বসবাসকারীরা দুর্ভোগে থাকেন, বর্ষা এলেই এই দুর্ভোগ চরমে ওঠে। এদিকে, শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নাক ডুব জল, বন্ধ দোকানপাট ও আতঙ্কিত জনসাধারণ। অনেকেই বলছেন, এ যেন ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যার পুনরাবৃত্তি। তবে ফেনী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি বন্যার পানি নয়—বরং খাল ও ড্রেন দখল এবং ভারি বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট সাময়িক জলাবদ্ধতা। এতে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে শহরবাসীর একটাই দাবি—অবিলম্বে খাল দখলমুক্ত করে পানি চলাচলের পথ উন্মুক্ত করা হোক। সেইসাথে অবৈধ মার্কেট ও স্থাপনা উচ্ছেদে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। নইলে শুধু বর্ষা নয়, বছর জুড়েই ফেনী শহরের মানুষকে ভুগতে হবে এ জলাবদ্ধতার অভিশাপে।