কুমিল্লার বুড়িচংয় বর্ডার এলাকায় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর গুলিতে আলাল খান (২৬) নামে এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বুড়িচং থানার ওসি আবুল হাসানাত খন্দকার।

শনিবার (৩১ মার্চ ২৪) রাত দুইটার দিকে শংকুচাইল ক্যাম্প সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে ।আহত আলাল খানকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগকে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আলালের ভাই এমার খান বলেন, আলাল খান লেবারের কাজ করেন। রবিবার রাত দুইটার দিকে শংকুচাইল ক্যাম্প এরিয়ায় কয়েকজন লেবার সীমান্তে ভারতীয় চিনি আনলোড করছিলেন। ওই সময় তাদের লক্ষ্য করে বিএসএফ সদস্যরা গুলি করে। এতে আমার ভাইয়ের মাথার ডান পাশ গুলিবিদ্ধ হয়। পরে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন আমার ভাইয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক।আহত আলাল খান গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলা মোহনগঞ্জ থানা মানিসনা এলাকায় আলতাফ খানের ছেলে। সীমান্তবর্তী এলাকার একাধিক নাগরিক জানান,ভারত সীমান্তবর্তী কুমিল্লা জেলা হওয়ায় দেশে মাদক প্রবেশের একটি প্রধান ট্রানজিট পয়েন্ট বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া। রমজান শুরুর আগ থেকেই সীমান্তবর্তী এলাকা ও মাদকের আখড়া হিসেবে চিহ্নিত এলাকা গুলোতে ফের সক্রিয় হচ্ছে মাদক কারবারিরা। প্রতি রাতেই সীমান্তের বিভিন্ন অরক্ষিত এলাকা দিয়ে দেদারছে প্রবেশ করছে ভারতীয় চোরাই পণ্য। বিশেষ করে চিনির আড়ালে নামছে মাদক।কারবারিরা ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে দিন দিন আরও সক্রিয় হয়ে উঠছে।এছাড়া সীমান্ত খোলা থাকার সুযোগে ফেনসিডিল, মদ, গাজা, আফিম, চরস, ভাং, সিদ্ধি, প্যাথেড্রিন, ইয়াবাসহ নানা প্রকার যৌন উত্তেজক সামগ্রী পাচার হয়ে আসছে। রাতে এসব পণ্য সীমান্ত সংলগ্ন নির্জন রাস্তায় ট্রাক বা পিকআপ বা মাইক্রো ভরে দেশের অভ্যন্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সীমান্তে পণ্য সরবরাহে আগত বিভিন্ন কোম্পানির ডেলিভানি ভ্যানে, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ভরে এসব পণ্য দেশের অভ্যান্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে সূত্র জানায়।

সীমান্তবর্তী বিভিন্ন থেকে চোরাই পণ্য নেমে বিভিন্ন হাট বাজার ও রাজধানী ঢাকায় পৌঁছে যাচ্ছে এসব ভারতীয় পণ্য। ক্রেতারা সস্তা ও চাকচিক্যময় ভারতীয় পণ্যের প্রতি বেশি আগ্রহী। ফলে অবিক্রিত হয়ে পড়ছে দেশীয় পণ্য। এতে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে এবং মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে সাধারণ লেবার।

এ বিষয়ে শংকুচাইল ক্যাম্প কামান্ডার প্রতিনিধির কাছে উপরোক্ত ব্যাপারে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সকাল ১০টার দিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই যুবককে হাসপাতালে আনা হলে জরুরি বিভাগে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানিয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *