কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুরে সুবল-আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকের ওপর বখাটেদের হামলার প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা দিকে থেকে এক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ সময় মহাসড়কে দীর্ঘ আট কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শুক্রবার মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান শেষ করে শিক্ষক ও একটি দৈনিক পত্রিকার দাউদকান্দি প্রতিনিধি আবদুর রহমান ঢালী ছাত্রীদের গাড়িতে তুলে দিচ্ছিলেন। এ সময় এলাকার রনিসহ কয়েকজন বখাটে ছাত্রীদের ইভটিজিং করলে তিনি বাধা দেন। পরে শিক্ষক ও সাংবাদিক আবদুর রহমান ঢালীকে বাজারে একা পেয়ে তার ওপর হামলা চালায় বখাটেরা। এর দুই দিন আগে ওই স্কুলের শিক্ষক মজিফুল ইসলামের ওপরও হামলা চালিয়েছিল ওই বখাটেরা। এক সপ্তাহের মধ্যে দুই শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে প্রথমে গৌরীপুর ঢাকা-হোমনা সড়কে মানববন্ধন করেন। পরে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে এক ঘণ্টা অবরোধ করে। এক ঘণ্টা পর প্রশাসনের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেয়। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলেন, রনিসহ কয়েকজন বখাটে স্কুলের গেটে এসে আমাদের ইভটিজিং করে। কোনো শিক্ষার্থী একা অটোরিকশায় উঠলে বখাটেরা জোর করে ছাত্রীর পাশে গিয়ে বসে পড়ে। শিক্ষকরা বাধা দেওয়ায় দুই শিক্ষকের ওপর হামলা করেছে। এর প্রতিবাদে আমরা মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ করেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষক মফিজুল ইসলাম বলেন, হাট চান্দিন এলাকায় ভাড়াটিয়া রনিসহ কয়েকজন বখাটে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করছিল। এ সময় আমরা তাদের গাড়িতে তুলে বাড়ি পাঠিয়ে দিই। পরে আমার সহকর্মী আবদুর রহমান ঢালীকে বাজারে একা পেয়ে তার ওপর হামলা করে বখাটেরা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম তালুকদার বলেন, এলাকার বখাটেরা প্রায়ই ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে। শিক্ষকরা এতে বাধা দিলে ওরা আমাদের ওপর হামলা করে। মনে হয়, তাদের কাছে আমরা জিম্মি। তাই শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করছি। শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেছে। বখাটেদের উৎপাত থেকে রক্ষায় এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। গৌরীপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জেনে তাৎক্ষণিক বখাটেকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। তবে স্থানীয় এক লোক মীমাংসার দায়িত্ব নিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পর বখাটের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পুলিশ প্রশাসনকে বলেছি। আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের অফিস মিটিংয়ে আছি। বিষয়টি আমি গুরুত্বসহকারে দেখছি, যাতে এ ধরণের ঘটনা আর না ঘটে।

By তালাশ বাংলা ডেস্ক

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আক্কাস আল মাহমুদ হৃদয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *