শপথ নিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে আরও ১৬ জনকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশের প্রথম সরকারের অংশ হলেন দুই ছাত্র। তারা হলেন মো. নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বঙ্গভবনে ড. ইউনূসসহ ১৪ উপদেষ্টাকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বাকি তিন উপদেষ্টা ঢাকার বাইরে থাকায় শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি। শপথ নেয়া অন্যান্যের মধ্যে জায়গা করে নেয়া আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মো. নাহিদ ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম দুই সমন্বয়ক। তারা দু’জনই ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন। উইকিপিডিয়ার তথ্য বলছে, আসিফ মাহমুদ এবং নাহিদ ইসলাম দুজনেরই জন্ম ১৯৯৮ সালে। অর্থাৎ তাদের বয়স ২৬ বছরের আশপাশে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত কম বয়সে আর কেউ কোনো সরকারের উপদেষ্টা হতে পারেননি। শুধু তাই নয়, এভাবে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে কারো অন্তর্বর্তীকালীন কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনেরও নজির নাই বাংলাদেশের ইতিহাসে। ইউকিপিডিয়ার তথ্যমতে, নাহিদ ইসলামের ডাকনাম ফাহিম। জন্ম ঢাকায়। বাবা শিক্ষক। মা গৃহিনী। তার ছোট এক ভাই রয়েছে। সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছেন নাহিদ। আর আসিফ মাহমুদের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নের আকুবপুর গ্রামে। পিতা মো. বিল্লাল হোসেন। মাতা রোকসানা বেগম। আদমজী ক্যান্টমেন্ট কলেজে পড়াশুনা করা আসিফ মাহমুদ কলেজটির বিএনসিসি ক্লাবের প্লাটুন সার্জেন্ট ছিলেন। কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগে পড়ছেন। আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক এবং নাহিদ সদস্য সচিব। গত বছরের ৪ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি নামে ছাত্র সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ করা হয়। তখন এই সংগঠনের ঘোষণা দেন ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। নিয়োগ পাওয়া ১৬ উপদেষ্টার মধ্যে ১৩ জন আজ শপথ নিয়েছেন। তারা হলেন— ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. ফরিদা আখতার ১১. আ.ফ.ম খালিদ হোসেন ১২. নুরজাহান বেগম ১৩. শারমিন মুরশিদ ঢাকার বাইরে থাকায় তিনজন শপথ নিতে পারেননি। তবে তাদের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। তারা হলেন: ফারুক–ই–আজম, সুপ্রদীপ চাকমা ও বিধান রঞ্জন রায়। তারাও শিগগিরই শপথ নেবেন বলে জানা গেছে। জানা গেছে, শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর বিক্ষুব্ধ জনগণ গণভবন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ভাঙচুর এবং লুটপাট করায় এ দুই জায়গায় আপাতত অফিস বা বসবাস করার মতো অবস্থায় নেই। তাই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন এবং কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হবে। ২০০৮ সালে এক-এগারোর পট পরিবর্তনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমেদও যমুনায় ছি‌লেন। এর আগে ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান এবং ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা লতিফুর রহমানও রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনাতে থেকেই তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন।

By তালাশ বাংলা ডেস্ক

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আক্কাস আল মাহমুদ হৃদয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *