কুমিল্লায় ঘুষ, তদবির বা কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়াই ট্রেইনি পুলিশ কনস্টেবল পদে ৭৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৪ মে) কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খাঁন এই নিয়োগের ফলাফল ঘোষণা করেন। নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে ৭০ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী। এদের মধ্যে ৭২ জন সাধারণ কোটায় এবং ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নির্বাচিত হয়েছেন। কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সের শহীদ আরআই এবিএম আবদুল হালিম মিনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উত্তীর্ণদের বরণ করে নেয় জেলা পুলিশ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খাঁন। আরও উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলার পুলিশ সুপার হাসান মোস্তফা, কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তৈয়ব মো. আরিফসহ পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পুলিশ সুপার বলেন, “প্রত্যেক মানুষ যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে সৎভাবে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে দেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে। ঘুষ ছাড়া নিয়োগ দেওয়া সম্ভব, আমরা সেটিই প্রমাণ করেছি। যারা নিয়োগ পেয়েছেন, তারা সবাই মেধাবী। আমি বিশ্বাস করি, তারা সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন।” চলতি বছরের ৪, ৫ ও ৬ এপ্রিল কুমিল্লা পুলিশ লাইন্স মাঠে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এতে মোট আবেদন পড়ে ১ হাজার ৩৫১টি। শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ৬৮৩ জন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ২৩৯ জন। মৌখিক পরীক্ষা শেষে ৭৫ জনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগপ্রাপ্ত মুরাদনগরের যুবক শাহিন মিয়া বলেন, “কোনো টাকা লাগে নাই, কেউ চায়ও নাই। মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশ বদলাচ্ছে।” মেঘনা উপজেলার শিমু আক্তার বলেন, “এখন বিশ্বাস হচ্ছে, যোগ্যতা থাকলে সরকারি চাকরি পাওয়া যায়। আমাদের গ্রামে সবাই অবাক!” চাকরি পাওয়া মাইনুলের বাবা, দাউদকান্দির কৃষক বাবুল মিয়া আবেগভরে বলেন, “ছেলের চাকরির জন্য বাড়ি বিক্রি করার কথা ভাবছিলাম। আল্লাহর রহমতে কিছুই লাগেনি, শুধু পরিশ্রম আর প্রার্থনা।”