কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের কোরপাই গ্রামের কৃষক মোবারক হোসেন গ্রীষ্ম ও আগাম শীতকালীন টমেটো চাষে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন। সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে এ চাষাবাদ শুরু করে তিনি লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করেছেন। বর্তমানে তিনি মৌলভীবাজার থেকে আনা গ্রাফটিং পদ্ধতিতে বিশেষজ্ঞ শ্রমিকদের সহযোগিতায় গ্রীষ্মকালীন টমেটো এবং ভারতীয় বীজে আগাম শীতকালীন টমেটো উৎপাদন করছেন। পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকদের কাছে চারা বিক্রিও করছেন তিনি। মোবারক হোসেন জানান, পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে টমেটো আমদানির প্রক্রিয়া দেখে তার আগ্রহ জন্মে। এরপর প্রথমে মৌলভীবাজার থেকে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে তৈরি গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চারা সংগ্রহ করেন। পরে সেখানে থেকে গ্রাফটিংয়ে পারদর্শী ১০ জন শ্রমিক এনে বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করেন। ২০২৪ সালে ভারত থেকে আগাম শীতকালীন টমেটোর বীজ এনে তিনি নতুনভাবে এ চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তার ফসলি মাঠে প্রায় ২০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। (২৮ সেপ্টেম্বর) রোববার সরেজমিন দেখা যায়, সাড়ে তিন একর করে কয়েকটি প্লটে টমেটো চাষ করা হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন টমেটোর জমিতে প্রায় ২৫ হাজার গাছ রয়েছে। গত জুন মাসের মাঝামাঝি রোপণ করা চারা থেকে মাত্র দুই মাসের মধ্যে ফলন আসতে শুরু করে। প্রতিদিনই এখান থেকে ২৫ কেজি ওজনের প্রায় ৩৫-৪০ ক্যারেট টমেটো সংগ্রহ করা হয়। প্রথমদিকে প্রতি কেজি টমেটোর দাম ছিল ১৪০-১৫০ টাকা। তবে ভারতীয় টমেটো আমদানির কারণে বর্তমানে দাম কমে ৯০-১১০ টাকায় নেমে এসেছে। সংগৃহীত টমেটো পাইকারদের মাধ্যমে নিমসারে বাজারজাত করা হয়। শ্রমিকদের মাসিক বেতন দেওয়ার পাশাপাশি তাদের থাকার ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন মোবারক। অন্যদিকে, আগাম শীতকালীন চারা পরিচর্যাতেও সমান ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। বর্তমানে প্রায় ২৮ হাজার চারা নিবিড় পরিচর্যায় বেড়ে উঠছে। ফলে সারাবছর টমেটো উৎপাদন ও বাজারজাত করার লক্ষ্য নিয়ে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এই কৃষক। মোবারক হোসেন বলেন, আমি ইতোমধ্যে একটি সোলার সেচ পাম্পের জন্য আবেদন করেছি। পাশাপাশি পলিনেট হাউজে চারা উৎপাদন এবং স্থানীয়ভাবে বারোমাস টমেটো সংরক্ষণের জন্য কোল্ডস্টোরেজ নির্মাণে সরকারের সহযোগিতা চাই। চারা উৎপাদন করে অন্যান্য কৃষকদের কাছেও সরবরাহ করছি। বুড়িচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসাঃ আফরিণা আক্তার তালাশ বাংলাকে বলেন, আমরা কৃষক মোবারককে নিয়মিত কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি এবং তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছি।
