কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের কাকিয়ারচর এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ বাণিজ্যে জড়িত স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুল হক। বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিডিসিএল) একটি ভিজিল্যান্স টিম গত ১৪ জুলাই দ্বিতীয় দফায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ১৩টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। এর আগে ৩০ জুন আরও ৭টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে কোনও মামলা হয়নি। সরেজমিন পরিদর্শন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাকিয়ারচর এলাকার জাতীয় মহাসড়কের পাশে সাদাত জুট মিলস সংলগ্ন স্থানে দীর্ঘদিন ধরে আব্দুল হক একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে আসছে। প্রতিটি সংযোগ দিতে নেওয়া হচ্ছে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত। স্থানীয় অনেক অবৈধ সংযোগ গ্রহীতা সরাসরি জানিয়েছেন—তারা আব্দুল হককে টাকা দিয়ে গ্যাস সংযোগ নিয়েছেন। এলাকায় শতাধিক পরিবার অবৈধ সংযোগে গ্যাস ব্যবহার করে আসছে, যেখানে বৈধ গ্রাহকরা নিয়মিত বিল পরিশোধ করছে। বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানির হিসেবে, শুধু কাকিয়ারচর ও আশপাশে প্রায় ২০০টি বৈধ সংযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ঠিকাদারদের মদদেই এই অবৈধ সংযোগগুলো পুনঃস্থাপন করা হচ্ছে। অভিযানের সময় মূল অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আব্দুল হক পালিয়ে গেলেও স্থানীয়দের দাবি—তিনি এখনও এই বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল হক বলেন, “আমি একা টাকা নেইনি, বাখরাবাদের ঠিকাদার মামুন কন্ট্রাক্টরসহ একসাথে সংযোগ দিয়ে টাকা নিয়েছি।” এদিকে স্থানীয় বৈধ গ্রাহকরা প্রশ্ন তুলেছেন—যখন অপরাধীরা বারবার ধরা পড়লেও তাদের বিরুদ্ধে কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, তখন এই অবৈধ বাণিজ্য চলবেই বা বন্ধ হবে কীভাবে? এতে একদিকে সাধারণ গ্রাহকরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন, অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব। বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির জনসংযোগ বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক বিমল চন্দ্র দেবনাথ জানান, কাকিয়ারচর এলাকায় ২ দফায় মোট ২০টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনও মামলা হয়নি।
সূত্র: দৈনিক রুপালী বাংলাদেশ ও দৈনিক আমার সংবাদ।