কুমিল্লার বুড়িচংয়ে রেলওয়ের মাটি লুট করাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৫ জন।
তালাশ বাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আজিজুল হক। তিনি জানায়,মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এতে রিমন,সুলতান ও শুভসহ ৫ জন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নে মাধবপুর রেললাইন এলাকায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে কয়েকদিন যাবত উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,ঢাকা-চট্রগ্রাম রেলসড়কের কাজ করার জন্য বুড়িচং উপজেলার মাধবপুর ও মাশরা সহ বিভিন্ন এলাকায় মাটি সংগ্রহ করে রাখেন রেলওয়ের প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।কিছু অংশের মাটি রেলসড়কের কাজে লাগানো হয় আর কিছু অংশের মাটি রেললাইনের পাশে রাখা হয়।সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়,বিগত বছরে আওয়ামীলীগ সরকারের সময় ঢাকা-চট্রগ্রাম রেলসড়কে রেলওয়ের প্রকল্প কর্মকর্তাদের অগোচরে মাটি লুট করে বিক্রি করে দেয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা।শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর রেলসড়কের অবিশিষ্ট মাটির স্তুপ পুনরায় লুট করা শুরু করে প্রভাবশালীরা।
সুলতান আহমেদ ও তার লোকজন নিয়ে রেলওয়ের মাটি লুট করে নেওয়ার সময় এহসানুল হক রিমন ও স্থানীয় কিছু যুবক বাঁধা দিতে গেলে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে। আহত এহসানুল হক রিমান(২৮) বাকশীমূল গ্রামের মৃত. ডা.ওবায়দুল হকের ছেলে।সে ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক ছাত্র ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক সবুজের ছোট ভাই। আহত রিমনের ভাই এনামুল হক সবুজ তালাশ বাংলাকে জানায়, রেলওয়ের মাটি রাতে লুট করার সময় রিমন বাঁধা প্রদান করলে সুলতান আহমেদের নেতৃত্বে ১৪-১৫ জন সংঘবদ্ধ হয়ে তাকে দেশীয় অন্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করলে গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।সেখানে রিমন ও কাউছারসহ ৬ দিন যাবত চিকিৎসাধীন রয়েছে। তিনি আরো জানায়,তার ছোট ভাই রিমনকে হাসপাতালে দেখতে যায়,কুমিল্লা মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি ও মহানগর বিএনপি নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার,কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব হাজী জসিম উদ্দিন জসিম,মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক শওকত আলী বকুল, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহবায়ক রেজাউল হক আখি,মহানগর বিএনপির নেতা সাজ্জাতুল কবীর সাজ্জাদ সহ আত্মীয় স্বজনরা। অপর দিকে আহত সুলতান আহমেদ এর ভাই প্রবাসী আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, ‘রেলওয়ের কাজ শেষ হওয়ার পর কিছু মাটি আমাদের জায়গার মধ্যে রেখে গেছে কর্তৃপক্ষ।’ আমার ভাই সুলতান আহমেদ মাটি কাটতে গেলে কালিকাপুরের বাহার আখন্দ ও সবুজের ভাই রিমনের নেতৃত্বে একটি দল বাঁধা প্রদান করে। আমিনুল ইসলাম আমিনের অভিযোগ,তাদের কিছু চাহিদা পূরণ না করায় এ ঘটনাটি ঘটে।এতে ভাই সুলতান আহমেদ ও ভাতিজা শাহরিয়া হাসান শুভ আহত হয়। ঘটনাস্থলে এসে দেখে গেছেন বুড়িচং থানার ওসি আজিজুল হক। স্থানীয়রা জানায়, প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করায় রাতে আঁধারে রেলসড়কের মাটি সহ আশেপাশের কৃষিজমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে কিছুসংখ্যক প্রভাবশালীরা। এ বিষয়ে বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি আজিজুল হক তালাশ বাংলাকে বলেন,মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে মারামারি ঘটনায় প্রায় ৫ জন আহত হয়েছে।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।