খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি ছাড়তে হবে বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে সালাম মুর্শেদীকে গুলশানের বাড়ি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত রায়ে বলেছেন, দুদকসহ অন্যান্য সংস্থার তদন্ত রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে সালাম মুর্শেদী গুলশানের যে বাড়িতে বসবাস করছেন সেটা সরকারের পরিত্যক্ত সম্পত্তি।
ওই সম্পত্তি বুঝে পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিবকে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী অনীক আর হক ও সৈয়দ সায়েদুল হক, সালাম মুর্শেদীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ শুনানিতে অংশ নেন।
রাজধানী ঢাকার গুলশান-২-এ অবস্থিত পরিত্যক্ত সম্পত্তির “খ” তালিকাভুক্ত বাড়িটি দখলে রাখার অভিযোগ তুলে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক (বর্তমানে সংসদ সদস্য)।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ১ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল দিয়ে বাড়িসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র হলফনামা আকারে দাখিল করতে নির্দেশ দেন। রুলে বাড়িটি বেআইনিভাবে দখলে রাখার অভিযোগে আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
এরপর রাজউক নথি দাখিল করে। বাড়ি নিয়ে অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ১৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক আদেশে প্রশ্ন ওঠা ওই ভূমি বা প্লটের চেইন অব টাইটেল (মালিকানা হস্তান্তরের পরম্পরা), দখলসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথি ও কাগজপত্র যুক্ত করে পক্ষগুলোকে হলফনামা (অ্যাফিডেভিট ইন অপজিশন) দাখিল করতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে অনুসন্ধান প্রতিবেদনসহ প্রয়োজনীয় নথি ও কাগজপত্র যুক্ত করে দুদককে ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হলফনামা দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই অনুসারে দুদক হলফনামা আকারে তথ্যাদি দাখিল করে।
এ সংক্রান্ত রুলের ওপর শুনানি শেষে পর্যবেক্ষণ, নির্দেশনাসহ রুল নিষ্পত্তি করে মঙ্গলবার হাইকোর্ট রায় দিলেন।