Spread the love

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের শীর্ষ নেতা শহীদ শরীফ ওসমান হাদির জানাজায় অংশ নিতে জাতীয় সংসদ ভবন সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে সমবেত হয়েছেন কয়েক লক্ষ মানুষ।অংশ নিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড.ইউনুস।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছাত্র-জনতা এবং সাধারণ মানুষ দলে দলে সেখানে জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা সাড়ে ১১টা বাজার আগেই পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। ‘আমরা সবাই হাদি হবো, যুগে যুগে লড়ে যাবো’ এবং ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’—এমন সব সংকল্পবদ্ধ স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে পুরো এলাকা। সবার চোখে জল আর মুখে প্রিয় নেতাকে হারানোর শোক থাকলেও বিচার পাওয়ার দাবিতে সবাই সোচ্চার।

শহীদ হাদির জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও এর আশেপাশের সকল প্রবেশ পথে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি র‍্যাব ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। বিশেষ টহলে রয়েছে সেনাবাহিনী।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১ হাজার বডি ওর্ন ক্যামেরাসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করেছে পুলিশ প্রশাসন। হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘর থেকে সহযোদ্ধা ও সমর্থকদের অংশগ্রহণে একটি বিশাল শোক মিছিলের মাধ্যমে হাদির মরদেহ জানাজার মাঠে নিয়ে আসার প্রস্তুতি চলছে। দুপুর ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, শহীদ হাদির পরিবারের বিশেষ ইচ্ছা ও দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে সমাহিত করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।

বাদ জোহর জানাজা শেষে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় ও সামরিক মর্যাদায় তাকে শেষ বিদায় জানানো হবে। এর আগে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে হাদির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। গত ১২ ডিসেম্বর বিজয়নগর এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় মোটরসাইকেলে আসা সন্ত্রাসীদের গুলিতে মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়ার পর থেকেই হাদির শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল।

সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘ লড়াই শেষে গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে হাদি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তার মরদেহ বাংলাদেশে পৌঁছালে বিমানবন্দরে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সিঙ্গাপুর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তার কফিন দেশে আনা হয়।

গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে হাদি তরুণ প্রজন্মের কাছে সাহসের এক মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন, যার প্রতিফলন আজ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মানুষের এই উপচে পড়া ভিড়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আজ বিকালেই কবি নজরুলের সমাধি সংলগ্ন এলাকায় তার দাফন সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে।

By তালাশ বাংলা ডেস্ক

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আক্কাস আল মাহমুদ হৃদয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *