কুমিল্লার বুড়িচংয়ে আলোচিত কলেজছাত্র তুহিন হত্যা মামলার তদন্তের অগ্রগতির অংশ হিসেবে এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। রবিবার (২ নভেম্বর) ভোর ৪টার দিকে কুমিল্লা কোতোয়ালী থানার শিমপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামি হলেন বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত হাজী আবুল খায়েরের ছেলে শফিউর আলম মানিক (৪২)। রাত ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা ডিবি পুলিশের ওসি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ এবং বুড়িচং থানার ওসি আজিজুল হক। গ্রেফতারের পর সোমবার (৩ নভেম্বর) শফিউর আলম মানিককে কুমিল্লার আমলী আদালত-২ এ হাজির করা হলে ম্যাজিস্ট্রেট আবিদা সুলতানা মোলির আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি তুহিনকে অপহরণ ও নির্যাতনের বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তদন্তের স্বার্থে জবানবন্দির তথ্য যাচাই-বাছাই করছে পুলিশ। ডিবি ওসি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ জানান, “বুড়িচং তুহিন হত্যা মামলার আসামি মানিককে গ্রেফতারের পর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।” উল্লেখ্য, গত ২০ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের কামাল মিয়ার বাড়ির সামনে থেকে এরশাদ ডিগ্রি কলেজের ছাত্র তুহিনকে জোরপূর্বক একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইতালি প্রবাসী সাইফুল ইসলাম বাবু এবং তার সহযোগীরা। অপহরণের পর তুহিনকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ৭ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ২৭ অক্টোবর দুপুরে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত তুহিনের মা ফেরদৌসী আক্তার বাদী হয়ে সাইফুল ইসলাম বাবু, তার ছেলে নাফিজ উদ্দিন, জহির, আবদুল আলিমসহ ৭-৮ জনের নাম উল্লেখ করে বুড়িচং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তুহিনের মৃত্যুর পর বুড়িচংয়ের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।
