নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ক্লাসে পড়া বুঝতে না পারায় শিক্ষক পরিবর্তনের দাবি করায় সপ্তম শ্রেণির প্রায় ৪১ শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অন্তত ৪ শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিভাবকদের অভিযোগে মঙ্গলবার দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীরা খোঁজ নিতে গেলে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেন শিক্ষার্থীরা। তারা হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বেশ কয়েকজনকে আহত করেন। স্থানীয়রা জানান, গত বছর ৫ আগস্টের পর তানভীর আহমেদ মুন্নাকে অফিস সহকারী হিসেবে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। মুন্না সাম্প্রতিক সময়ে সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ক্লাস নিতে শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা তার পাঠদান স্পষ্টভাবে বুঝতে না পারায় প্রধান শিক্ষকের কাছে তাকে পরিবর্তনের আবেদন করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মুন্না ক্লাসে উপস্থিত প্রায় ৪১ শিক্ষার্থীকে লাঠি দিয়ে মারধর করেন। মারধরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তাসনিম, কেয়া, তাবাসসুম, মীমসহ কয়েকজন। আজ সকালে আহত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয়রা বিদ্যালয়ে এসে প্রধান শিক্ষকের কাছে বিচার দাবি করেন। খবর পেয়ে ছুটে আসেন গণমাধ্যমকর্মীরা। এ সময় শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের উসকানি দিলে পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্র লাঠিসোঁটা-হাতুড়িসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাংবাদিকদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এতে রূপালী বাংলাদেশ পত্রিকার প্রতিনিধি রাকিবুল ইসলাম, একাত্তর টিভির ভিডিও জার্নালিস্ট হাফিজুর রহমান, প্রাইম টিভির সাকের আহমেদ, অভিভাবক ওমেদ আলী, সাংবাদিকদের গাড়ি চালক ইকবার হোসেনসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের মধ্যে রাকিবকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে এলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবায়দুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে অনুশোচনা প্রকাশ করেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিক নূরে আলম ঘটনায় জড়িত শিক্ষক মুন্নাকে বিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলার উসকানির অভিযোগে আরো তিনজনকে সাময়িক বহিষ্কার ও অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। এ ছাড়া অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থার আশ্বাস দেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক তানভীর হোসেন মুন্না পলাতক রয়েছেন। অভিভাবকরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।