Spread the love

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে প্রতিবেশীর হামলায় নিহত হয়েছেন সুজন (২৮) নামে এক যুবক। ছেলের জীবন বাঁচাতে দুই বছর আগে কিডনি দিয়েছিলেন তার মা খোকনা বেগম। এলাকার মানুষের সহযোগিতায় চিকিৎসা খরচ চালিয়েও শেষ পর্যন্ত সন্তানের জীবন রক্ষা করতে পারলেন না তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের পূর্বহুড়া গ্রামে। নিহত সুজন ওই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। (২৩ আগস্ট) শনিবার ১০টার দিকে পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছিলেন সুজন। প্রায় দুই বছর আগে মায়ের দেওয়া কিডনি প্রতিস্থাপনের পর তিনি নতুন জীবন ফিরে পান। স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিলেন তিনি। কিন্তু চলতি বছরের ২৩ মে পারিবারিক বিষয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা কাটাকাটির জেরে হামলার শিকার হন সুজন। হামলার পর থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। গতকাল শুক্রবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহতের মা খোকনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ছেলের জীবন বাঁচাতে আমি কিডনি দিয়েছি, মানুষের কাছে হাত পেতে চিকিৎসার খরচ চালিয়েছি। তবুও শেষ পর্যন্ত আমার ছেলেকে বাঁচাতে পারলাম না। প্রতিবেশীর হামলায়ই আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক মো. সোলাইমান জানান, গত ২৩ মে সন্ধ্যায় তার দোকানের সামনে সুজন ও প্রতিবেশী রোকনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রোকন ও জসীম তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং কিডনি প্রতিস্থাপনের স্থানে আঘাত করে। এরপর থেকেই সুজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।প্রতিবেশী জহুর মিয়ার ছেলে রোকন ও আব্দুল আলীর ছেলে জসীম উদ্দীনের হামলায় আহত হয়ে সুজনের এমন মৃত্যুতে মর্মাহত এলাকাবাসী। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর আমরা এলাকার মানুষ টাকা তুলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। তার মা কিডনি দিয়েছেন। কিন্তু প্রতিবেশীর হামলার পর সুজনের অবস্থা আবারও খারাপ হয়ে যায় এবং অবশেষে সে মারা যায়। এদিকে এলাকার মানুষ সুজনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক তালাশ বাংলাকে জানান, নিহত পরিবারের অভিযোগের পর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রির্পোট আসার পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *