Spread the love

কুমিল্লায় ব্যস্ততম মহাসড়কে ঝুঁকিপূর্ণ একটি ইউটার্নে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে প্রাইভেট কারের ওপর সিমেন্ট বোঝাই কাভার্ড ভ্যান উল্টে পড়ে স্বামী-স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ একই পরিবারের ৪ জন নিহত হন। পরে শুক্রবার রাত ১১টার দিকে জেলার বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা ইউনিয়নের হোসেনপুর বেপারী বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে বাবা মা ও তাদের দুই সন্তানকে পাশাপাশি দাফন হয়েছে। এর আগে স্থানীয় হোসেনপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে এলাকার সর্বস্তরের লোকজন অংশ নেয়। একই পরিবারের চার জনের মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিকেলে মরদেহ নিতে ঢাকা থেকে হাইওয়ে ময়নামতি থানায় আসেন পরিবারের লোকজন। এ সময় তারা মরদেহ দেখে আহাজারী করতে থাকেন। দুর্ঘটনায় নিহতরা ঢাকা থেকে কুমিল্লার বরুড়ায় নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন। নিহত ওমর আলী এবং নুরজাহান বেগম বরুড়ায় নিজ বাড়িতেই বসবাস করতেন। মাঝে মধ্যে চিকিৎসার জন্য তারা রাজধানীতে ছেলে মেয়েদের কাছে যেতেন। মাস দুয়েক আগে ওমর আলীর চিকিৎসার জন্য ঢাকায় বড় ছেলের বাসায় যান। সুস্থ হয়ে শুক্রবার ওমর আলীকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন তাদের দুই ছেলে। পথিমধ্যেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণ হারান সবাই। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে নিহত ওমর আলীর বড় মেয়ের স্বামী দেলোয়ার হোসেনসহ পরিবারের লোকজন ময়নামতি হাইওয়ে থানায় মরদেহ গ্রহণ করতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, নিহত ওমর আলীর বড় ছেলে আবুল হাসেম স্বপনের বাসা রাজধানীর কল্যাণপুরে। নিজ ফ্ল্যাটেই থাকতেন স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে। ব্যাংক এশিয়ার মিরপুর রুপনগর ব্রাঞ্চের ব্যবস্থাপক ছিলেন। তিনি দুই সন্তানের জনক। নিহত অপর ছোট ছেলে আবুল কাশেম মামুন রাজধানীর মানিকগর এলাকার নিজ ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন। তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। আবুল কাশেম মামুন দুই ছেলের জনক। ওমর আলীর বড় মেয়ে হাসিনা আক্তার যমুনা ব্যাংকের ধোলাইখাল শাখায় কর্মরত আছেন। ছোট মেয়ে রোকসানা আক্তার বিথি ডাচ বাংলা ব্যাংকের শ্যামলী শাখায় কর্মরত আছেন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন নিহত ওমর আলীর বড় ছেলে ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল হাসেম। নিহত ওমর আলীর চাচাতো ভাই সাব্বির হোসেন সুমন বলেন, মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আমরা মরদেহ নিতে গিয়েছিলাম। এ পরিবারটি এলাকার মধ্যে একটি উচ্চ শিক্ষিত পরিবার। তাদের এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। ময়নামতি হাইওয়ে থানার এসআই আনিসুর রহমান সমকালকে বলেন, কাভার্ডভ্যানটি সিমেন্ট বোঝাই ছিল। হাইওয়ে পুলিশের কম ধারণ ক্ষমতার ক্রেন (রেকার) আছে। কাভার্ডভ্যানটি বেশি ওজনের হওয়ায় উদ্ধার কাজ চালাতে বেশি ধারণ ক্ষমতার ক্রেন ভাড়া করে আনতে হয়েছে। এতে উদ্ধার কাজ বিলম্ব হয়েছে। তবে আমরা ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই সকলের মৃত্যু হয়। বিনা ময়নাতদন্তে রাতে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে মামলা করা হয়েছে। সওজ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দঃ গোলাম মোস্তফা বলেন, পদুয়ার বাজার এলাকায় ইউলুপ তৈরির কাজ চলমান আছে। এরই মধ্যে কাজ ২৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। গত বছরের ৩০ জুন কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন কারণে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে। কাজ শেষ হলে যানবাহন গুলি আর ঝুকিপূর্ণ ইউটার্ন দিয়ে যেতে হবে না। দুর্ঘটনাও কমে আসবে।

By তালাশ বাংলা ডেস্ক

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আক্কাস আল মাহমুদ হৃদয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *