আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না। যদি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হয়, আমার যে ভাইয়েরা শহীদ হয়েছিল, রক্ত দিয়েছিল সংস্কারের জন্য, তাহলে কবরে গিয়ে তাদের লাশ সরকারকে ফেরত দিতে হবে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত ‘জাতীয় যুব সম্মেলন ২০২৫’–এ বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে এর আয়োজন করে এনসিপির যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তি’। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমার যে ভাইয়ের হাতটা চলে গিয়েছিল, যদি সংস্কার কাজ শেষ না করে নির্বাচন হয়, তাহলে এই সরকারকে আমার ভাইয়ের হাতটা ফিরিয়ে দিতে হবে। যে মায়ের বুক খালি হয়েছিল, ওই মায়ের বুকের সন্তানকে ফেরত দিতে হবে।’ নির্বাচনের আগে রাষ্ট্র সংস্কার ও অভ্যুত্থানের সময়কার ঘটনায় বিচারের দাবি জানিয়ে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘একই সংস্কৃতির ডামাডোলে, একই ফ্যাসিবাদী সংবিধানে, একই সিস্টেমের মধ্য দিয়ে আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি। তাহলে এতগুলো মানুষ শহীদ হবার প্রয়োজন কি ছিল? এতগুলো মানুষ আহত হবার প্রয়োজন কী ছিল?’ সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করে এনসিপির এ নেতা বলেন, গণমাধ্যম আগে ছিল ‘হাসিনামাধ্যম’, এখন কি মাধ্যম সেটা বললে চাকরি থাকবে না। গণঅভ্যুত্থানের পরে সকল মিডিয়ার সম্পাদকদের সঙ্গে বসেছিলাম, তাদেরকে একটা কথা বলেছিলাম, যা আকাম করেছেন, ঘরের ভেতরে বসে থাকেন। যদি লজ্জা থাকে, ঘরের ভেতর থেকে বের হবেন না। কিন্তু তাদের লজ্জা নেই। তারা বারবার বাংলাদেশের মানুষদের ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে। আয়নাঘর ও একটি গোয়েন্দা সংস্থার কাজের সমালোচনা করে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘একটা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই আপনার-আমার পকেটের টাকায় চলাফেরা করে। তারা কত টাকা খরচ করে বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারবে না। তাদের কোনো দায়িত্ববোধ নেই, জবাবদিহিতা নেই, স্বচ্ছতা নেই। তাদের একটাই কাজ, মানুষকে ভীতি প্রদর্শন করে–কিছু হলেই আয়নাঘরে তুলে নিয়ে আসব। আপনার আয়নাঘর আমরা ভেঙে দিয়েছি। সামনে যদি একই ধরনের প্রচেষ্টা করা হয়, আমরা আয়নাঘর কেন, ডিজিএফআইয়ের হেডকোয়ার্টার আমরা ভেঙে দেব। যথেষ্ট সহ্য করেছি। বাংলাদেশ যদি ডিজিএফআই থাকতে হয়, অবশ্যই এটার সংস্কার করতে হবে।’ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জাতীয় যুবশক্তির সদস্যসচিব জাহেদুল ইসলাম প্রমুখ।